বাচ্চাদের পানিবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষায় মা-বাবার করণীয়_.jpg

বাচ্চাদের পানিবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষায় মা-বাবার করণীয়

 

শিশু যখন অসুস্থ হয়, তখন তার কান্না শুধু ঘরের চার দেয়াল নয়, নাড়িয়ে দেয় মা-বাবার মানসিক শান্তি। শিশুর হাঁচি, জ্বর কিংবা শারীরিক অসুস্থতা আমাদের বুঝিয়ে দেয়পানি কেবল জীবন নয়, সুরক্ষিত পানিই আসলে সুস্থ জীবনের পূর্বশর্ত।

 

পরিচ্ছন্ন পানির অভাবে অসুস্থ শৈশব

 

শিশুদের পানিবাহিত রোগ আজকাল শুধু গরমকালে নয়, বর্ষাকাল, এমনকি শীতকালেও প্রকট আকার ধারণ করছে। কলেরা, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস-এ সহ এসব রোগের মূল উৎসই হচ্ছে দূষিত পানি। তাই, শিশুদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা মানে শুধু পানি দেওয়া নয়, বরং একটি রোগমুক্ত শৈশব উপহার দেওয়া।

 

পানিবাহিত রোগের লক্ষণ শিশুদের মধ্যে

 

·         ঘন ঘন পাতলা পায়খানা

·         জ্বর ও দুর্বলতা

·         বমি ভাব বা বমি

·         পেট ব্যথা

·         অরুচি বা খাওয়ায় অনীহা

·         ত্বকে ফুসকুড়ি বা ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ

 

এসব উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

কীভাবে শিশুকে পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা করবেন?

 

১. বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করুন

 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা। খাবার পানি অবশ্যই ফিল্টার করা অথবা ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে RO Water Purifier বা RO+UV+UF ফিল্টার ব্যবহার করুন।

 

২. পানির পাত্র পরিষ্কার রাখুন

 

পানির পাত্র প্রতিদিন ধুয়ে ফেলুন এবং ঢেকে রাখুন। খোলা পাত্রে রাখা পানি জীবাণুর বাসস্থান হয়ে দাঁড়ায়।

 

৩. দুধ ও শিশুখাদ্যের পানিতেও সতর্কতা

 

শিশুদের দুধ, খাবার বা ওষুধ মেশানোর সময় যে পানি ব্যবহার করছেন, তা যেনো শতভাগ বিশুদ্ধ ও জীবাণুমুক্ত হয়, তা নিশ্চিত করুন।

 

৪. বাড়ির পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করুন

 

ঘরের পানির উৎস যদি নিজস্ব ট্যাংক হয়, তবে প্রতি ৩-৬ মাসে একবার পরিষ্কার করা আবশ্যক। অনেক সময় সেখান থেকেও শিশুদের পানি সংক্রমণ ঘটতে পারে।

 

৫. হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন

 

খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

৬. স্কুলে বা বাইরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন

 

বাচ্চাদের সঙ্গে নিজস্ব পানির বোতল দিন, যাতে তারা বাইরের অপরিচ্ছন্ন পানি খাওয়ার প্রয়োজন না পড়ে।

 

মা-বাবার করণীয় : শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষায় সচেতনতা

 

প্রতিটি মা-বাবাই চান তাদের সন্তান সুস্থ থাকুক, হাসুক, প্রাণ খুলে খেলুক। কিন্তু শুধুমাত্র ইচ্ছা নয়, তার জন্য প্রয়োজন সচেতন পদক্ষেপ। 


শিশু স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রথমেই আসে পানির নিরাপত্তা। নিজে সচেতন হোন, সন্তানের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করুন এবং পরোক্ষভাবে তাকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলুন। একটি সুরক্ষিত শৈশব গড়ে ওঠে ছোট ছোট অভ্যাসেসেই অভ্যাসের ভিত্তি হোক বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার।

 

পানিবাহিত রোগের প্রতিকার

 

পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে ওরস্যালাইন, প্রচুর বিশ্রাম, এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ জরুরি। রোগ বেড়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

উপসংহার

 

পানির মাধ্যমে রোগ থেকে বাঁচার উপায় আমাদের হাতেই। শিশুরা নিজেরা সচেতন নয়, তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব মা-বাবার কাঁধে। তাই আজ থেকেই একটি প্রতিজ্ঞা হোক— “শিশুর সুস্থতার শুরু হোক বিশুদ্ধ পানি দিয়ে

Related Article

Share